তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতভর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি, পাল্টাপাল্টি স্লোগান ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আজ রবিবার ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মীর মুগ্ধ আন্তঃডিসিপ্লিন ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা চলাকালীন সিএসই (কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং) এবং আইন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথমে কথা-কাটাকাটি হয়। যদিও সেই সময় পরিস্থিতি শান্ত হয়েছিল, কিন্তু সন্ধ্যায় জোরে বাইক চালানোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা নতুন মোড় নেয়।
জানা যায়, একুশ-বাইশ সেশনের আইন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মারুফ বিল্লাহকে পাশ কাটিয়ে জোরে বাইক চালিয়ে যাচ্ছিলেন বিশ-একুশ সেশনের ইউআরপি (আরবান অ্যান্ড রুরাল প্ল্যানিং) ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন লিমন। এ সময় মারুফ লিমনকে আস্তে বাইক চালানোর কথা বললে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে যে, এই কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে লিমন মারুফের গায়ে হাত তোলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই আইন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে মহিউদ্দিন লিমনের ওপর চড়াও হন এবং তার উপরও আক্রমণ করেন।
এই ঘটনা দ্রুত সময়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষের মধ্যে চলে হাতাহাতি ও মারামারি। অভিযোগ রয়েছে, জুনিয়র কর্তৃক সিনিয়রদের গায়ে হাত তোলা ও সিনিয়র কর্তৃক জুনিয়রের গায়ে হাত তোলার মত ঘটনাও ঘটে এসময়ে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন এবং তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের হস্তক্ষেপে রাত ১২টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু রাত ১টার দিকে দুই গ্রুপ থেকে দুটি মিছিল বের হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এসে জড়ো হয়। এ সময়ে একে অপরকে ভূয়া ভূয়া বলেও স্লোগান দিতে শোনা যায়।
শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভের সময় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম পরিস্থিতি শান্ত করতে এগিয়ে আসেন। তিনি বলেন, “খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় একটি শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাস। যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।”
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে উপাচার্য ২৪ আগস্ট (রবিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণাও দেন। বর্তমানে ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং সবাই কর্তৃপক্ষের পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করছে।
খুলনা গেজেট/এইচ